সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ইউনিয়নের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি ও ভিজিএফের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন।
এ ছাড়াও ইউনিয়নে উন্নয়নমূলক কাজের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে গম, চাল ও টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা অতিদরিদ্রদের কর্মসূচির আওতায় কর্মসংস্থানের শ্রমিকদের নামের তালিকায় নিজস্ব লোকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেও বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিকার ও বিচারের দাবিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
যুগান্তরের পক্ষ থেকে কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন এক ব্যক্তি তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে ভুয়া তথ্য পরিবেশন করেছেন।
এই বক্তব্য ধোপে টেকে না, কারণ সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়নের অনেকেই তাদের বক্তব্যে চেয়ারম্যানের দুর্নীতির কথা তুলে ধরেছেন।
শুধু পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ি ইউনিয়ন নয়, সারা দেশেই ইউনিয়ন পর্যায়ে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটছে।
দেশে খুব কম ইউনিয়ন পাওয়া যাবে, যেখানে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা দুর্নীতি করছেন না। মেগা প্রকল্পগুলোর দুর্নীতির তুলনায় এসব দুর্নীতি খুব ছোট হলেও আমরা বলব দুর্নীতি দুর্নীতিই, এর কোনো ছোট-বড় হয় না। বস্তুত দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করা অতি গর্হিত কাজ। এছাড়া ইউনিয়নের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর আকার ছোট হলেও সেখানে দুর্নীতি হলে ইউনিয়নের উন্নয়ন বাধাগ্রস্তই হয় না শুধু, ইউনিয়নবাসীকে বঞ্চিত করা হয় তাদের প্রাপ্য সুবিধা থেকে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দেয় এই আশায় যে, নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থাকবেন, এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখবেন। কিন্তু দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন না।
নির্বাচনের আগে দেওয়া তাদের প্রতিশ্রুতিও ভুলে যান। আমরা মনে করি, শুধু কিশোরগাড়ি ইউনিয়ন নয়, সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সংঘটিত দুর্নীতি-অনিয়ম উদঘাটিত হওয়া উচিত। কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে অবশ্যই।